মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ, দেশের শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতি-ইতিহাস এবং বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্য সমুন্নত রাখার প্রচেষ্টায় সম্প্রীতি বাংলাদেশ যেভাবে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে তাকে এক কথায় বলা যায় যে, এই সংগঠনটি মূলত প্রগিতশীল দলগুলোর ভূমিকায়ই পালন করে চলেছে।
কিছুদিন আগে একাধিক জনপ্রিয় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এবং প্রিন্ট মিডিয়ায় সম্প্রীতি বাংলাদেশ-এর কার্যক্রমের ওপর কিছু বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, সেখান থেকে তাদের প্রশংসনীয় সব কার্যক্রম সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পাওয়া যায়। সম্প্রীতি বাংলাদেশ আজ যে কাজগুলো করছে তা মূলত দেশের প্রগতিশীল সংগঠনগুলো একসময় সফলভাবেই করেছে।
দেশে অসাম্প্রদায়িক চেতনা সমুন্নত রাখতে এবং ইতিহাস-ঐতিহ্য, শিল্প-সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাতে প্রগতিশীল সংগঠনগুলো ষাট ও সত্তরের দশকে তো বটেই, এমনকি স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে স্বৈরাচারী শাসনামলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
প্রগতিশীল সংগঠনগুলোর সরব উপস্থিতির কারণে মৌলবাদী সংগঠন খুব একটা সুবিধা করে উঠতে পারেনি। কিন্তু গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকে স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশে গণতান্ত্রিক ধারা ফিরে আসার পর থেকেই প্রগতিশীল দলগুলোর ভূমিকা কমতে শুরু করে এবং এখন তো তাদের অবস্থান একেবারে শূন্যের কোঠায়। এর ফলে দেশে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ, অসাম্প্রদায়িক চিন্তাচেতনা এবং শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশে এক ধরনের শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছিল। আর বাস্তবতা হলো শূন্যস্থান কখনও শূন্য থাকে না এবং সেই সুযোগে নানান অপশক্তি জায়গা করে নিয়েছে।
আজ আমাদের দেশে মৌলবাদীদের যে উত্থান তার অন্যতম কারণ, দেশে প্রগতিশীল দলগুলোর অনুপস্থিতি। যদিও কিছু সাংস্কৃতিক সংগঠন, শহীদ পরিবারের সন্তান ও ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এবং মিডিয়ার বড় একটি অংশ এ ব্যাপারে সোচ্চার থাকার কারণে মৌলবাদীরা এখনও খুব একটা সুবিধা করে উঠতে পারেনি। কিন্তু প্রগতিশীল দলগুলোর অনুপস্থিতির কারণে সৃষ্ট শূন্যতা যথেষ্টই উপলব্ধি করা যায়। আর অনেক দেরিতে হলেও সম্প্রীতি বাংলাদেশ সেই শূন্যস্থানটি যথার্থই পূরণ করতে পেরেছে।
করোনায় শুধু প্রগতিশীল সংগঠন কেন, এখন ছাত্রসমাজ, বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকাও আর তেমন চোখে পড়ে না। সেই ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে দেশের স্বাধিকার আন্দোলন, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ সকল ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা। শুধু আন্দোলন সংগ্রাম নয়, জাতির অনেক সংকটকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান অনস্বীকার্য। দেশের অনেক প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে।
আমার ১৯৮৮ সালের প্রলয়ংকরী বন্যার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্রাণ কার্যক্রমের কথা স্পষ্ট মনে আছে। সেই ভয়াবহ বন্যায় দেশের প্রায় নব্বই শতাংশ পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাপক ত্রাণ বিতরণের এবং স্যালাইন তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল।
আমি নিজেও সেই কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলাম। তখন আমরা একদল খুব সকালে বের হয়ে যেতাম বিভিন্ন স্থান ও বাসাবাড়ি থেকে ত্রাণের সামগ্রী সংগ্রহ করার জন্য। উদ্দেশ্য ছিল কোনোরকম জোরজবরদস্তি না করে প্রত্যেক বাড়ি থেকে সকালের নাশতার খাবারের যা কিছু অবশিষ্ট থাকত তা সংগ্রহ করে আনা। কিন্তু আমাদের এমন উদ্যোগে অনুপ্রাণিত হয়ে অধিকাংশ বাড়ি থেকে ত্রাণের জন্য অনেক রুটি বানিয়ে আমাদের দিয়ে দিত।
আমরা সেগুলো ডাকসু ভবনের সামনে কেন্দ্রীয় ত্রাণ কেন্দ্রে জমা দিতাম এবং অন্য আরেক দল সেগুলো নিয়ে বেরিয়ে যেত ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকার বন্যাদুর্গতদের মাঝে বিতরণের জন্য। সেই সঙ্গে চলত খাবার স্যালাইন বানানোর বিশাল কর্মযজ্ঞ। আজ করোনা মহামারির সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ভূমিকাই চোখে পড়ে না, যা খুবই হতাশাজনক। যদিও আজকের প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন, তারপরও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে তারা এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারত।
এত হতাশার মাঝেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের প্রাক্তন ছাত্রদের সংগঠন, জগ্ননাথ হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন কিছুটা হলেও আশার সঞ্চার করেছে। তারা বিশ্বব্যাপী এক তহবিল সংগ্রহের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তারা দেশের অভ্যন্তরে এবং বিদেশে বসবাসরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের প্রাক্তন ছাত্রদের কাছ থেকে তহবিল সংগ্রহ করার চেষ্টা করছে এবং যথেষ্ট সফলও হয়েছে বলেই জেনেছি।
তাদের এই মহৎ উদ্যোগে বিভিন্ন দেশে বসবাসরত জগন্নাথ হলের ছাত্রদের সংগঠনও সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। জগন্নাথ হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন অব কানাডা তো বেশ সক্রিয়ভাবেই তাদের এই উদ্যোগে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। এই তহবিল সংগ্রহের পেছনে তাদের নিজস্ব কিছু কর্মসূচি নিশ্চয়ই আছে। তবে এর পাশাপাশি আমরা আশা করব যে তাদের সংগৃহীত তহবিলের একটি অংশ প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণভান্ডারে জমা দিয়ে এই করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে শামিল হওয়ার চেষ্টা করবে।
তাছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করতে আসা জগন্নাথ হলের অনেক ছাত্র এতটাই সাধারণ ঘরের সন্তান যে, তারা ঢাকায় টিউশনি করে শুধু যে নিজেদের লেখাপড়ার খরচ চালান তাই নয়, তারা অনেকে বাড়িতে টাকা পাঠিয়ে সাংসারিক খরচ জোগাতেও সাহায্য করেন। অথচ আজ দেড় বছর হতে চলল তাদের সেই টিউশুনি নেই। ফলে তারা এবং তাদের পরিবার যে চরম আর্থিক সংকটে আছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন যে তহবিল সংগ্রহ করেছে, সেখান থেকে এই হতদরিদ্র ছাত্রদেরও সাহায্য সহযোগিতা প্রদান করতে পারে। এই করোনা মহামারির সময় অনেকেরই সাহায্য সহযোগিতা প্রয়োজন। তাই এই সংকটকালে বাংলাদেশের জগন্নাথ হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন যে তহবিল সংগ্রহের মহৎ উদ্যোগ হাতে নিয়েছে তাকে আরও বিস্তৃত এবং জোরালো করে দেশের মানুষের মাঝে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে।
প্রগতিশীল দলগুলোর হারিয়ে যাওয়া এবং ছাত্র সংগঠন বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্লিপ্ততার কারণে যে শূন্যতা বিরাজ করছিল তা অনেকাংশেই পূরণের জন্য সম্প্রীতি বাংলাদেশ নিরলসভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা আমাদের দেশে ধর্মবর্ণ-নির্বিশেষে মানুষের মাঝে সম্প্রীতি বজায় রেখে মিলেমিশে শান্তিতে বসবাস করার যে হাজার বছরের ঐতিহ্য তা সমুন্নত রাখতে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে।
এই সংগঠনটি এই প্রচেষ্টার পাশাপাশি আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছে, যা তাদের ভিশন, মিশন, ব্যাপ্তি, গুরুত্ব এবং কর্মপরিধি বাড়িয়ে দিয়েছে অনেক গুণ। বিশেষ করে এই করোনা মহামারির সময় তাদের ভূমিকা এবং কার্যক্রম এই সংগঠনকে নিয়ে গেছে অন্যন্য এক উচ্চতায়। করোনা মহামারির শুরু থেকেই সম্প্রীতি বাংলাদেশ এগিয়ে এসেছে সাহসী কিছু পদক্ষেপ নিয়ে। তারা প্রথমেই দেশের অনেক গুণী চিকিৎসকের সমন্বয়ে গড়ে তোলেন এক শক্তিশালী চিকিৎসক দল যাদের মাধ্যমে ভার্চুয়াল বা টেলি-চিকিৎসাসেবা প্রদান শুরু করে।
এমনকি দেশে করোনা ভ্যাকসিন প্রদান নিয়ে দেশের মানুষের মধ্যে যে সংশয় ও শঙ্কা দেখা দিয়েছিল, বিশেষ করে একটি মহলের অপপ্রচার যেভাবে চলছিল সেটিকে বন্ধ করতেও এই সংগঠন অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। এখন ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের কারণে দেশজুড়ে দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে যে ভয়ংকর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, সেখানেও এই সংগঠনটি বসে নেই। তারা বিভিন্ন জেলায় নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী সরবরাহ করছে। সীমিত সামর্থ্যের মধ্যে থেকেও সম্প্রীতি বাংলাদেশের এসব কল্যাণমুখী কার্যক্রম ও অবদান সকলের দৃষ্টি কেড়েছে এবং প্রশংসা পেয়েছে।
করোনা মহামারির কারণে এই সংগঠনের কার্যক্রম সীমিত হয়ে গেলেও একেবারে থেমে নেই। প্রতি সপ্তাহে ওয়েবিনারের আয়োজন করে যেখানে দেশ-বিদেশের প্রথিতযশা ব্যক্তিরা গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন যা মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস এবং আমাদের ঐতিহ্য, শিল্প-সংস্কৃতির ব্যাপারে সঠিক তথ্য জানতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
আমাদের বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস, একুশে ফেব্রুয়ারি, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস, শহীদ জননী জাহানারা ইমামের মৃত্যুবার্ষিকী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলামসহ সব গুণী মানুষের জন্ম ও মৃত্যু দিবস স্মরণ করা, ঈদ পুনর্মিলন, দুর্গাপূজা, বৌদ্ধপূর্ণিমা এবং বড়দিন উপলক্ষে আলোচনাসহ এমন কোনো জাতীয় ঘটনা নেই, যার ওপর সম্প্রীতি বাংলাদেশ বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করেনি। এ বছর বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে তাদের বিশেষ অনুষ্ঠান সকলকে মুগ্ধ ও অভিভূত করেছে।
সম্প্রীতি বাংলাদশের যাত্রা শুরু হয়েছে মাত্র তিন বছর আগে। এই তিন বছরের অর্ধেক সময় করোনা মহামারির কারণে সকল অনাবশ্যক বিষয়ের কার্যক্রম স্থবির হয়ে আছে। তারপরও তারা যেভাবে তাদের কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে চলেছে এবং এই অল্প সময়ের মধ্যে দেশ ও বিদেশে তাদের কার্যক্রমের যে গ্রহণযোগ্যতা এবং জনপ্রিয়তা পেয়েছে তা এক কথায় অভিভূত হয়ে যাবার মতো।
আমি সম্প্রীতি বাংলাদেশের এমন সফল কার্যক্রম দেখে পরিচিত একজনের সঙ্গে কথা বলছিলাম। আমার কাছে শুনে তিনি বেশ মুগ্ধ হয়ে আমাকে জানালেন যে, সমগ্র বিশ্বে যেভাবে উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে তাতে সম্প্রীতি বাংলাদেশ কেন, সম্প্রীতি বিশ্ব গঠন করা প্রয়োজন। একটি কথা এখানে উল্লেখ না করলেই নয়। আমাদের দেশে কোনো মহৎ উদ্যোগ চালিয়ে নেয়া বেশ দুরূহ কাজ, কেননা প্রতি পদে নানান প্রতিবন্ধকতা, এমনকি অনেক ষড়যন্ত্রও মোকাবিলা করতে হয়। কোনো একটি সংগঠনের কাজের জনপ্রিয়তা এবং গ্রহণযোগ্যতা যখন ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পায়, তখন এই প্রতিবন্ধকতা এবং ষড়যন্ত্রও জোরালো হতে থাকে। অনেকই তখন সেই সংগঠনকে তাদের স্বার্থের পথে হুমকি মনে করে, ফলে তাদের অগ্রযাত্রা থামিয়ে দিতে নানান অপচেষ্টা চালিয়ে যায়। সম্প্রীতি বাংলাদেশ যেভাবে কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে চলেছে তাতে তাদেরও যে আগামীতে এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে না তা নিশ্চিত করে বলা যায় না।
আমরা আশা করব এবং দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সম্প্রীতি বাংলাদেশ এ ব্যাপারে সতর্ক আছে এবং থাকবে। এই সংগঠনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত আছেন দেশের বরেণ্য ও প্রথিতযশা ব্যক্তিবর্গ। তারা সবাই আমাদের দেশের সবচেয়ে কঠিন সময় পার করেছেন এবং সকল প্রকার ভয়ভীতি, প্রতিকূলতা এবং ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে দেশে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের চেতনা সমুন্নত রাখতে যথেষ্ট সফল হয়েছেন। তাই তাদের নেতৃত্বে এবং দিকনির্দেশনায় সম্প্রীতি বাংলাদেশও আগামীতে সকল ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে এবং সকল প্রকার প্রতিবন্ধকতা ও ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে এই সংঘটনের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে সক্ষম হবেন বলে আশা করতে পারি।
লেখক: ব্যাংকার, কলাম লেখক টরেনটো, কানাডা
Nironjankumar_roy@yahoo.com